পুরনো জরাজীর্ণ ভবনে চলছে দৈনন্দিন কার্যক্রম। নেই প্রয়োজনীয় জনবল ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা। ২০২২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত একটি হিসাবও খোলা সম্ভব হয়নি। সাধারণ সেবাগ্রহীতারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। অথচ পোস্ট অফিসের সামনে টানানো হয়েছে ডিজিটাল ব্যানার। লেখা হয়েছে ‘স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট’। এমন চিত্র খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার প্রধান ডাকঘরের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডাকঘরটিতে বর্তমানে অনুমোদিত ২০টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। নেই হিসাবরক্ষক ও কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার)।
এ কারণে পোস্টাল অপারেটররাই হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে, পোস্টম্যানের জন্য বরাদ্দ দুটি পদের মধ্যে একজন মাত্র কর্মরত রয়েছেন। ফলে সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে সেবার মান দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। সম্প্রতি সরেজমিনে ডাকঘরটিতে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটি একেবাইরেই জরাজীর্ণ। ফাইলপত্র থেকে শুরু করে হিসাব- সবই চলছে পুরনো পদ্ধতিতে। ফলে একটি সাধারণ হিসাব খোলার জন্য গ্রাহকদের দিনদিন ঘুরতে হয়, ফিরতে হয় হতাশ হয়ে। অভিযোগ রয়েছে, সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে অসহযোগিতা এবং দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা স্পষ্ট এই কার্যালয়ে। স্থানীয় বাসিন্দা অধ্যক্ষ ফারুকুর রহমান বলেন, আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার এই যুগে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এতটা দুর্বল ব্যবস্থাপনায় চলবে তা কল্পনার বাইরে। সেবাগ্রহীতারা প্রতিদিন এসে ফিরে যাচ্ছেন। অথচ কার্যকর কোনো সমাধান নেই। অনেকে বাধ্য হয়ে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দিকে ঝুঁকছে। মুক্তিযোদ্ধা প্রমোদ বিহারী নাথ ও ব্যবসায়ী সাধন দে বলেন, রামগড় প্রধান ডাকঘরের বর্তমান চিত্র উদ্বেগজনক। জরুরি ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ, আধুনিক ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু এবং দায়িত্বশীল মনোভাব ছাড়া এই অচলাবস্থা থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। ডাকঘরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত পোস্ট মাস্টার গিয়াসউদ্দিন বলেন, রামগড় ডাকঘর জেলা পর্যায়ের প্রধান ডাকঘর । কিন্তু জনবল সংকট ও প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে বহু সেবা ব্যাহত হচ্ছে। নতুন হিসাব খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক ও সফটওয়্যারবিষয়ক জটিলতায় এখানে নতুন হিসাব খোলা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।